দৈনন্দিন জীবনে বিঞ্জান
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
অথবা
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান
অথবা
আধুনিক জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব
অথবা
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা
ভূমিকা :-আধুনিক সভ্যতা বিজ্ঞানের দান। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমরা বিজ্ঞানের দ্বারা আবদ্ধ।বর্তমান যুগ গতির যুগ। আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনযাত্রায় বিজ্ঞান এনে দিয়েছে আরো দ্রুততা। এনে দিয়েছে সমৃদ্ধি। আধুনিক জীবনে এক মুহূর্তও বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া চলা অসম্ভব। বিজ্ঞানের আশীর্বাদ পুষ্ট মানব জীবন। আজ সুখ-সমৃদ্ধির চরম শিখরে এসে পৌঁছেছে।
বনচারী মানুষ বোনের অন্ধকারে পাথরে পাথরে ঘর্ষণে যখন আগুন জ্বালাতে সেগুলো। সেই আগুন ছিল বিজ্ঞানের জয়যাত্রা প্রদীপ শিখা।
বিজ্ঞান কি? :-"কত অজানারে জানাইলে তুমি? কত ঘরে দিলে ঠাঁই,দূরকে করিলে নিকট বন্ধু পরকে করিলে ভাই।"
যার সহায়তায় আজ আমরা সমগ্র বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছি,নব্য সভ্যতা ধারণ করেছি এবং বাহুবল, মস্তিষ্কের বুদ্ধি ওহ হৃদয়ের একান্ত সাধনার ফলে হাজার হাজার বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা। সভ্যতার এই বিশাল ইমারতের ভিত্তিই হল বিজ্ঞান। অজ্ঞাত বিষয়ে জানার জন্যই মানুষের দ্বারা নিত্য নতুন সত্য আবিষ্কার হচ্ছে।আর এইসব সত্য আবিষ্কারই হল বিজ্ঞান।
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা:- বিজ্ঞান এমন এক বিশেষ জ্ঞান যা পরীক্ষা, প্রমাণ, যুক্তি আর অভিজ্ঞতার দ্বারা নির্ণেয় ও প্রতিষ্টিত এই জ্ঞানী আয়ত্তে এনেছে বিশ্বপ্রকৃতিকে। যা যুগ যুগ ধরে নিশিথ অন্ধকারে শিশুমনে ছুঁড়ে দিত দৈবিক ও ভৌতিক শক্তির ভয়াবহতা। আর আজ মানুষ বিজ্ঞানের জন্যই বিদ্যুৎ কে করেছে করায়ত্ত ,মেঘকে করেছে বশীভূত। , ধরিত্রী কে করেছে অভিশাপ মুক্ত।
বিজ্ঞানের বহুমাত্রিক অবদান:- "science is our guidance, thanks is a word animation"
বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এগিয়ে চলেছে মানব সভ্যতা। বর্তমান যুগে মানব জীবনের বহু শাখায় বিজ্ঞানের অবদান পরিলক্ষিত হচ্ছে। মানব জীবনের বহু ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অগ্রগণ্য। বিজ্ঞানকে আরো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এর ফলে বিজ্ঞানকে মানব জীবনের বহু ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।
বিজ্ঞানের বিবর্তন:- প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আবিষ্কারের ধারায় এগিয়ে চলেছে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা। আগুন আবিষ্কার→ চাকা আবিষ্কার→কপিকল আবিষ্কার→ সূর্যঘড়ি→ মাপ যন্ত্র→জ্যোতির্বিজ্ঞান→ রসায়নশাস্ত্র→ শল্যচিকিৎসা→ শিল্প →শিক্ষা→ কম্পিউটার→ মহাকাশ অভিযান। এভাবে ক্রমবিবর্তনের ধারায় আমরা সর্বত্র সগর্ব দাপটে এগিয়ে চলেছি।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন ধারা:-
i)কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান -: মানব সভ্যতার সূচনা লগ্নে মানুষ তার বৈজ্ঞানিক চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উর্বর জমিতে কৃষি কার্যের উপায় উদ্ভাবন করেছে। এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আবিষ্কার হয়েছে ট্রাক্টর, হারভেস্টার,সেচযন্ত্র প্রভৃতি। এছাড়া পোকামাকড় মারার কীটনাশক, জৈবিক সার কৃত্রিম বৃষ্টিপাত হবে হয়েছে বিজ্ঞানের দৌলতে।
ii) যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিজ্ঞান:-বিজ্ঞান দূরকে করেছে নিকট। বিজ্ঞানের জন্যই আমরা পেয়েছি রেল, জাহাজ,বিমান, স্টিমার, মহাকাশযান শুধু তাই নয়। যোগাযোগব্যবস্থার আরো গুরুত্বপূর্ণ অবদান যেমন মোবাইল ইন্টারনেট টেলিফোন টেলিগ্রাম। এই সবকিছুই বিজ্ঞানের অবদান।
iii)চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান-: বিজ্ঞানের অবদানে শিশুমৃত্যু কমেছে মানুষের আয়ু বেড়েছে। শল্যচিকিৎসায় দুরারোগ্য রোগের সমাধান হয়েছে। মানুষের দৃষ্টি স্থাপন যক্ষা নিবারণ গুটিবসন্ত নিবারণ প্রভৃতি ভয়ানক রোগের অবসান ঘটেছে বিজ্ঞানেরই আশীর্বাদে।
iv)দুর্যোগ বিপর্যয় রক্ষায় বিজ্ঞান:-বর্তমানের দুর্যোগ যেন এক আধুনিক অভিশাপ। এই অভিশাপ কে জয় করেছে আবহাওয়া দপ্তর। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি আগাম তথ্য যেমন জীবনহানি বাঁচায়। তেমনি রক্ষা করে ঘরবাড়ি সম্পত্তি ইত্যাদি।
বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ-: বিজ্ঞান যেমন মানুষকে গিয়েছে ঠিক তেমনি এর অপপ্রয়োগের ঘটেছে পরিবেশ দূষণ। হিরোশিমা নাগাসাকির বিধ্বংসী বোমা ১৯৪৫ এ ছিনিয়ে নিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ। এছাড়া শিল্প দূষণ করছে জল নদী বায়ু। বিশ্ব উষ্ণায়ন ভয়ানক রূপ নিচ্ছে। বরফ গলছে, বন্যার বৃদ্ধি হচ্ছে। জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে ।এইসবই বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ এর দান।
উপসংহার :- আমরা মানুষ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব বলে নিজেদের গণ্য করি। এই মানুষের প্রধান গুণ মনুষত্বকে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রকৃত যুক্তিবাদী মানুষ কে তার সংস্কার যুক্ত মন দিয়ে খুজে নিতে হবে সঠিক ও নির্দিষ্ট পথটি। তবেই পৃথিবীও মানবজাতির আলোকময় যাত্রাপথ হবে সুনিশ্চিত।
टिप्पणियाँ
एक टिप्पणी भेजें